ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বড় সাফল্য পেল পানিহাটি। রাজ্যের মধ্যে এই প্রথম কোনও পুরসভা সম্পূর্ণ ডেঙ্গু মুক্ত এলাকা হিসেবে স্বীকৃতি পেল। রাজ্য নগর উন্নয়ন সংস্থার (সুডা) একটি সমীক্ষায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, টানা তিন মাস ধরে পানিহাটিতে একজনও ডেঙ্গু রোগীর সন্ধান মেলেনি।
আরও পড়ুন: কলকাতায় মিলল আফ্রিকা-মধ্যপ্রাচ্যে দাপিয়ে বেড়ানো বিরল মশা, চিন্তায় পুরসভা
এই অভূতপূর্ব সাফল্যের পিছনে রয়েছে পানিহাটি পুরসভার লাগাতার উদ্যোগ। নিয়মিত বাড়ি বাড়ি ঘুরে জল জমা রয়েছে কিনা তা দেখা, স্থানীয়দের সচেতন করা, জমা জল থাকলে সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার করা, এমন বহু পদক্ষেপ নিয়মিতভাবে নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। পানিহাটি পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের মেয়র পারিষদ হিমাংশু দেব বলেন, সুডা-র এক বিশেষ সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে পানিহাটিই রাজ্যে প্রথম ডেঙ্গু মুক্ত এলাকা। এটি একটি বড় মাইলফলক। তিনি পতঙ্গবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে যুক্ত ভিবিডি টিম ও স্যানিটেশন কর্মীদের কৃতিত্ব দেন। ডেঙ্গু দমনে যে কঠোর নজরদারি চালানো হয়েছে, তা আগের থেকে অনেক বেশি আধুনিক পদ্ধতিতে করা হয়েছে বলে জানান তিনি। মেয়র পারিষদ জানান, প্রতিটি ভিবিডি কর্মীকে জিপিএস যুক্ত ফোন দেওয়া হয়েছে যাতে তাঁদের কাজ কোথায় কীভাবে হচ্ছে, সেটা ট্র্যাক করা যায়। ফলে কোনও তথ্য গোপন বা ভুল রিপোর্ট দেওয়ার সুযোগ থাকছে না।
২০১৩ সাল থেকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দফতরের অধীনে চলা জাতীয় পতঙ্গবাহিত রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি ও পানিহাটিতে ডেঙ্গু রোখার লড়াইয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে কলকাতা পুরসভা যেসব আধুনিক ব্যবস্থা নিয়েছে, সেখান থেকেও অনুপ্রাণিত হয়েছে পানিহাটি। নাগরিকদের সচেতন করে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে এবং প্রশাসনিক কড়াকড়ির মাধ্যমে পানিহাটির এই সাফল্য অর্জিত হয়েছে। এক ভিবিডি কর্মী জানান, এবার ঘরে ঘরে নজরদারি আরও জোরদার হয়েছে। জল জমা দেখলেই স্যানিটেশন টিমকে জানানো হচ্ছে এবং দ্রুত পরিষ্কারের ব্যবস্থা হচ্ছে।পানিহাটি পুরসভা এখন চায়, এই ডেঙ্গু মুক্ত অবস্থান সারা বছর ধরে বজায় রাখতে। জনসচেতনতা ও পুরসভার কর্মতৎপরতা মিলিয়ে পানিহাটির এই উদাহরণ রাজ্যের অন্যান্য পুরসভাগুলির কাছেও প্রেরণা হয়ে উঠছে।