বৃষ্টি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে আতঙ্কও। একদিকে নিম্নচাপ, অন্যদিকে ডিভিসির জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত সব মিলিয়ে দক্ষিণবঙ্গের বহু জেলার মানুষ এখন প্রবল উদ্বেগে। জানা গিয়েছে, অতিবৃষ্টির ফলে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) ইতিমধ্যেই দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে আরও জল ছাড়তে শুরু করেছে। পাশাপাশি, মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকেও জল ছাড়া হচ্ছে। যার ফলে হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান সহ একাধিক জেলার নিচু এলাকায় প্লাবনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: টানা ১৭ দিন ধরে জলছাড়া অব্যাহত, রাজ্যের আপত্তি সত্ত্বেও পরিমাণ বাড়াল DVC
ডিভিসি সূত্রে খবর, দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে ৪৬ হাজার কিউসেক জল ছাড়া শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকেও মোট ৪০ হাজার কিউসেকের বেশি জল ছাড়া হচ্ছে। সোমবার রাত থেকে মাইথন থেকে ১০ হাজার কিউসেক এবং পাঞ্চেত থেকে ৩০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। এছাড়া দুর্গাপুর অঞ্চলে টানা বৃষ্টিতে জল জমে থাকায় সেখান থেকেও আরও ৬ হাজার কিউসেক অতিরিক্ত জল ছাড়া হয়েছে। ফলে গঙ্গা ও দামোদর তীরবর্তী এলাকাগুলিতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
বরাবরই ডিভিসির জলছাড়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছে রাজ্যের বেশ কিছু জেলা। প্রতি বছর বর্ষার মরসুমে একাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়, ফসল ভেসে যায়, ক্ষতি হয় ঘরবাড়ির। এবারও সেই চিত্রের পুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন অনেকে। এদিকে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় লাগাতার বৃষ্টির ফলে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম সহ বিভিন্ন জেলায় নদীগুলির জলস্তরও বেড়ে চলেছে। গন্ধেশ্বরী, দ্বারকেশ্বর, শিলাবতী, কংসাবতী, ভৈরোবাঁকি প্রায় সব নদীতেই জলের পরিমাণ চোখে পড়ার মতো বেড়েছে। ফলে পুরুলিয়ার মুকুটমণিপুর জলাধার থেকেও সাড়ে ১২ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, রাজস্থান থেকে পুরুলিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত মৌসুমী অক্ষরেখার প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গে এখন ঘনঘন বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দুই ২৪ পরগনা, হুগলি, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে জারি হয়েছে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির লাল সতর্কতা। সব মিলিয়ে, এই মুহূর্তে দক্ষিণবঙ্গ কার্যত ‘জলাতঙ্কে’ ভুগছে। প্রশাসনের তরফে নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছে রাজ্য সরকারও।