প্রথমে চিনের সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতক। এরপর পেকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফুয়েল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর, নানইয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে জীববিজ্ঞানে পিএইচডি এবং সবশেষে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োডাইভার্সিটিতে ডিগ্রি অর্জন।বর্তমানে সেই চিনের উচ্চশিক্ষিত যুবক ডিং ইউয়ানঝাও কাজ করছেন খাবার ডেলিভারি রাইডার (ডেলিভারি বয়) হিসেবে। তবে তাঁর এই কাজের নেপথ্যে লুকিয়ে রয়েছে ব্যতিক্রমী এক গল্প, যা এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
১৬৩.কমের প্রতিবেদন অনুসারে, ৩৯ বছর বয়সি ডিং-এর শিক্ষাজীবন অনেকের কাছে স্বপ্নের মতো। কিন্তু বড়-বড় ডিগ্রি ও গবেষণার পরেও উপযুক্ত চাকরি না পেয়ে তিনি একজন ফুড ডেলিভারি কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। এক সময় তিনি সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পোস্ট ডক্টরাল গবেষক হিসেবেও কাজ করেছেন। কিন্তু বারবার চেষ্টা করেও মনের মতো চাকরি না পাওয়ায় শেষপর্যন্ত ফুড ডেলিভারির কাজকেই বেছে নেন জীবিকা হিসেবে। বিভিন্ন কোম্পানিতে দশটির বেশি ইন্টারভিউ দিলেও কোথাও স্থায়ী চাকরি জোটেনি।
আরও পড়ুন-মহাকাশ স্টেশনের আইকনিক ‘কুপলায়' হাস্যোজ্জ্বল ভারতীয় নভশ্চর শুভাংশু
নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় ডিং জানান, এটা একটা স্থায়ী কাজ। এই আয়ে তিনি তার পরিবারের ভরণপোষণ চালায়। পরিশ্রম করলে ভালো ইনকাম হয়, কাজটা খারাপ না। তাঁর মতে, কাজই মানুষকে মূল্যবান করে তোলে, শুধু ডিগ্রি নয়। ডিং বলেন, ‘অনেকেই উচ্চশিক্ষা নিয়েও এই ধরনের কাজ করেন। ডেলিভারি বয়ের কাজেরও মূল্য আছে। এটা সমাজের জন্য অবদান রাখার একটি পথ।’
অনেকেই তাঁকে গৃহশিক্ষক হিসেবে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে ডিং জানান, তিনি খুব লাজুক। তাই ছাত্র খোঁজার কাজটা তাঁর পক্ষে সহজ নয়। ফলে গৃহশিক্ষকের কাজ না করে ডেলিভারিতেই মন দিয়েছেন।ডিং চিনের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার সদ্য সমাপ্ত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন,‘জীবনে চ্যালেঞ্জের মুখে কখনও মনোবল হারাবেন না।’
আরও পড়ুন-মহাকাশ স্টেশনের আইকনিক ‘কুপলায়' হাস্যোজ্জ্বল ভারতীয় নভশ্চর শুভাংশু
ডিংয়ের এই গল্প সোশ্যাল মিডিয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। কেউ-কেউ উচ্চশিক্ষার বাস্তব মূল্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, আবার অনেকেই ডিংয়ের ধৈর্য, পরিশ্রম ও আত্মমর্যাদাবোধের প্রশংসা করেন। একজন মন্তব্য করেন, ‘এটাই জীবন। ডিগ্রি থাকলেই যে সব সময় চাকরি মিলবে, এমন গ্যারান্টি নেই। তবে সকল কাজকে সম্মান করা উচিত।’