গত বছর পুণের কল্যাণী নগরে মদ্যপ অবস্থায় বহুমূল্যের বিদেশি পোর্শে গাড়ি চালিয়ে দুই বাইক আরোহী সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকে পিষে মারার অভিযোগ ওঠে ধনকুবের এক রিয়্যাল এস্টেট ডেভেলপার বিশাল আগরওয়ালের ছেলের বিরুদ্ধে। পুলিশ প্রথমে প্রভাবশালী পরিবারের ওই নাবালককে আড়াল করার চেষ্টা করলেও বিষয়টি নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। এক বছর পর সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় অভিযুক্তের বয়স ১৮-এর কম হওয়ায় নাবালক হিসেবেই তাঁর বিচার হবে বলে জানিয়ে দিল জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড।
অভিযুক্তের আইনজীবী বলেন, পুণে পুলিশের অভিযুক্তকে প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে বিবেচনা করার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। এই মামলার শুনানি চলাকালীন, বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর শিশির হিরে যুক্তি দেন যে, ১৭ বছর বয়সী ওই কিশোর মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিল এবং তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিএস) ধারা ৩০৪ এবং ৪৬৭ ধারায় রক্তের নমুনা কারচুপির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি বলেন, 'দুই অপরাধের জন্যই ১০ বছরের বেশি কারাদণ্ড এবং জুভেনাইল জাস্টিস এক্টের অধীনে জঘন্য কাজ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। তাই প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবেই তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।'
আরও পড়ুন-ছাত্রী মৃত্যুতে তোলপাড় দেশ! BJP সরকারের মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে 'ওড়িশা বনধ'
এরপরেই অভিযুক্তের আইনজীবী প্রশান্ত পাতিল এই আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন যে, জেজে এক্ট পুনর্বাসন এবং সংস্কারের উদ্দেশ্যে তৈরি। তিনি সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের উদ্ধৃতি দিয়ে যুক্তি দেন যে, আইনের অধীনে অভিযোগগুলি 'জঘন্য' বলে বিবেচিত হয় না। প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে তার বিচার করা জুভেনাইল জাস্টিস-র মতাদর্শের বিরুদ্ধে হবে।এর আগে পুণের দুর্ঘটনার পরে নাবালককে বাঁচাতে গাড়ির ড্রাউভারের উপর দোষ চাপাতে চেয়েছিল গোটা পরিবার। তারা চেয়েছিল, গোটা ঘটনার দায় নিক পোর্শে গাড়ির চালক। তাঁর ফোন কেড়ে নিয়ে একটি বাংলোয় আটকে রেখেছিলেন নাবালকের বাবা ও দাদু। পরে গ্রেফতার করা হয় তাঁদের। অন্যদিকে, রক্তের নমুনা পাল্টে দেওয়ার জন্য গ্রেফতার হয়েছেন দুই চিকিৎসক। তাদের জেরা করেই উঠে আসে অভিযুক্ত নাবালকের মা শিবানী আগরওয়ালের নাম।
আরও পড়ুন-ছাত্রী মৃত্যুতে তোলপাড় দেশ! BJP সরকারের মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে 'ওড়িশা বনধ'
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে সালের ১৯ মে পুণের কল্যাণী নগরে দুই ইঞ্জিনিয়ারকে পোর্শে দিয়ে চাপা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে এক কিশোরের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় দু’জনেরই মৃত্যু হয়। পুণের সে দিনের ঘটনা তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল গোটা দেশে। কিশোরের বিরুদ্ধে মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগ ওঠে। ওই বছরই বম্বে হাইকোর্ট এই মামলার শুনানিতে বলে, শিশু সংশোধনাগারে এতদিন ধরে রেখে দেওয়া বেআইনি। অবিলম্বে তাকে মুক্ত করার নির্দেশ দেয় আদালত।