তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত নেত্রী রাজন্যা হালদারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন তাঁর এক সময়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ও সহকর্মী বৈশালী দত্তগুপ্ত। তিনি অভিযোগ করেছেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দলকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছেন রাজন্যা। চুঁচুড়ায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বুধবার এমনটাই দাবি করেছেন বৈশালী। (আরও পড়ুন: কসবা ধর্ষণে অভিযুক্ত মনোজিতের 'অনুপ্রেরণা' গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই!)
আরও পড়ুন: আরজি করের সময় শর্টফিল্ম বিতর্ক তৈরি করা রাজন্যা কসবাকাণ্ড নিয়ে বললেন…
ব্যান্ডেলের বাসিন্দা বৈশালী তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্ত থাকার পাশাপাশি হুগলি জেলা যুব তৃণমূলের সহ সম্পাদক ছিলেন। তিনি বলেন, একসময় দুজনেই জয়ী ব্যান্ডের সদস্য ছিলেন। সেই সূত্রে দুজনের পরিচয় হয় এবং বন্ধুত্ব হয়েছে। তিনি জানান, ব্যান্ডে থাকার সুবাদেই ২০২৩ সালের ২১ জুলাইয়ের শহিদ দিবসের মঞ্চে বক্তব্য রাখার সুযোগ পেয়েছিলেন রাজন্যা। এরপর দলের একাধিক কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রীর সংস্পর্শে এসেছেন তিনি। বৈশালীর দাবি, এত কাছ থেকে থেকেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নিজের অভিযোগ পৌঁছে দিতে না পারার দাবি একেবারেই ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। বৈশালী জানান, রাজন্যা যেভাবে ‘অনেক মনোজিৎ’ থাকার ইঙ্গিত দিচ্ছেন, তাতে ভবিষ্যতের ছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। তাঁর কথায়, একটা নামকে সামনে রেখে এই বার্তা দেওয়া হচ্ছে যেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বা দলেই মেয়েরা সুরক্ষিত নন। বাস্তব কিন্তু তা নয়। (আরও পড়ুন: দিল্লি গিয়েও মমতা বন্দনায় দিলীপ, 'দলত্যাগ' নিয়ে বিস্ফোরক প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি)
দলীয় অতীতের প্রসঙ্গ টেনে বৈশালীর দাবি, অনেক বছর ধরে দল করছেন। আন্দোলনের দিন-রাত কেটেছে দলীয় ভাই ও বন্ধুদের পাশে নিয়েই। কখনও মনে হয়নি, মেয়েরা অসুরক্ষিত। বরং মেয়েদের পাশে ছায়ার মতো থেকেছেন দলের মানুষরাই।রাজন্যার বাবাকে কটাক্ষ করেছেন বৈশালী। তাঁর কথায়, বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতিকে রাজন্যার বাবা সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। অথচ এক সময় তিনিই ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে। বৈশালীর বক্তব্য, রাজন্যা লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি থেকে টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনার কথা বললেও, কোথা থেকে বা কে দেবে সে সম্পর্কে কখনও স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।
চলচ্চিত্র তৈরির প্রসঙ্গও টানেন বৈশালী। অভিযোগ, আরজি কর হাসপাতালের আবহে বিতর্কিত একটি সিনেমা বানানো হয়েছিল দলীয় অনুমতি ছাড়া। তখন বলা হয়েছিল, ‘নেত্রী’ ও ‘অভিনেত্রী’ রাজন্যা আলাদা। কিন্তু দল সাসপেন্ড করার পর থেকে তিনি পতন মেনে নিতে পারছেন না। সেই হতাশা থেকেই এখন দলকে কালিমালিপ্ত করার প্রচেষ্টা চলছে। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে রাজন্যা দাবি করেছিলেন, তাঁর নগ্ন ছবি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল মোবাইলে। স্বামী প্রান্তিকের কাছে সেই ছবি পৌঁছলে ঘটনাটি তাঁর নজরে আসে। এরপর থেকেই দলীয় নেতাদের একাংশ রাজন্যার এই বক্তব্যকে ঘিরে প্রকাশ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।