একদম ঠিক সময় ঘাড়টা ঘুরিয়ে নিয়েছিলেন। নাহলে ঠিক খুলিতে এসে লাগত বুলেট। আর সেটা ধরা পড়ল নয়া একটি ভিডিয়োয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের কানের উপরের অংশে যখন গুলিটা ছুঁয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল, সেই মুহূর্তের একটা ভিডিয়ো সামনে এল। যে ভিডিয়ো দেখে শিউরে উঠেছেন নেটিজেনরা। ওই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে যে পেনিসিলভানিয়ার মঞ্চে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিচ্ছেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। নিজের স্বভাব মতো বারবার ঘাড় ঘোরাতে থাকেন। আর একবার ঘাড় ঘোরানোর ঠিক পরেই কানে কিছু একটা অনুভব করেন। কানে হাত দেওয়ার পরেই রক্ত দেখে মাথা নামিয়ে ফেলেন। সম্ভবত তখন গুলির শব্দও শুনতে পান। ততক্ষণে মার্কিন সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টরা এসে তাঁকে পুরোপুরি ঘিরে ফেলেন। তাঁকে পুরোপুরি ‘গার্ড’ করে রাখেন।
‘শোঁ করে আওয়াজ শোনার পরই….’
সেই মুহূর্তে ঠিক কী হয়েছিল, সেটার ব্যাখ্যা দিয়ে ট্রাম্প বলেন, 'আমায় লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছিল। যা আমার কানের উপরের অংশ ভেদ করে চলে যায়। শোঁ করে আওয়াজ শোনার পরই আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে কিছু একটা গড়বড় হয়েছে। তারপরই অনুভব করি যে আমরা চামড়ার মধ্যে দিয়ে বুলেট চলে গিয়েছে।'
এখন কেমন আছেন ট্রাম্প?
আর কানের উপরের অংশ ছুঁয়ে বুলেট বেরিয়ে যাওয়ায় বড় কোনও বিপদ হয়নি। ট্রাম্প কমিউনিকেশনসের অধিকর্তা স্টিভেন চুং জানান, গুরুতর আহত হননি আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট। তাঁর শারীরিক অবস্থা ভালো আছে। স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প কমিউনিকেশনসের অধিকর্তা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের টার্নিং পয়েন্ট হল এই গুলি?
তবে পেনিসিলভানিয়ায় যে ঘটনা ঘটেছে, তা আগামী ৫ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের জীবনের বড় টার্নিং পয়েন্ট হয়ে গেল বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের। ওই মহলের মতে, গুলি চালনার ঘটনার পরে রিপাবলিকানদের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে ট্রাম্পের নামে পুরোপুরি সিলমোহর পড়ে গেল। ছিঁটেফোটাও কোনও সন্দেহ থাকলেও তা দূরে হয়ে গেল পেনিসিলভানিয়ার ঘটনায়।
ওই মহলের মতে, গুলি চালনোর ঘটনার পরে ট্রাম্পের যে ছবি ছড়িয়ে পডেছে, তাতে একইসঙ্গে দুটি ভাবমূর্তি তৈরি হয়ে গিয়েছে আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের - 'হিরো' এবং 'হিংসার শিকার' (ভিক্টিম)। এতদিন ডেমোক্র্যাটরা যে তাঁকে রাজনৈতিক হিংসার 'উৎস' হিসেবে চিহ্নিত করতেন, সেটা পুরোপুরি ঘুরে গিয়েছে। বরং এখন রিপাবলিকানরা পালটা বলতে পারবেন যে ট্রাম্পই আদতে রাজনৈতিক হিংসার 'শিকার'।
শুধু তাই নয়, সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, পেনিসিলভানিয়ার ঘটনার পরে সহানুভূতি একটা বড় ফ্যাক্টর হতে চলেছে। সহানুভূতি ভোট পেতে পারেন ট্রাম্প। যে প্রদেশগুলিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত ছিল, তাতেও ট্রাম্পরা সহজে সেগুলির বাধাও পার করে দিতে পারেন।