চলন্ত ট্রেনে একের পর এক গুলি। তাতেই লুটিয়ে পড়েন তিন যাত্রী ও আরপিএফের এক সিনিয়র অফিসার। অভিযুক্ত চেতন সিং আরপিএফের কনস্টেবল। এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি ঘটনার দিন একটু আগেই সিফ্ট শেষ করতে চেয়েছিলেন। তার শরীর ভালো লাগছিল না। কিন্তু তার সিনিয়ররা জানিয়ে দেন তাকে পুরো সিফট করতে হবে। এরপরই তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পরে তিনি আরপিএফ সাব ইনস্পেক্টর টিকারাম মীনাকে নিশানা করে গুলি চালান। আরও তিন যাত্রীকে গুলি করে খুন করেন তিনি।
এবার এনিয়ে অপর আরপিএফ কনস্টেবল অময় আচার্য স্টেটমেন্ট দিয়েছেন। সোমবার ডিউটির সময় চেতন সিং, মীনা আর তিনজন টিকিট চেকারের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। মীনা আমাকে বলেন, সিংয়ের শরীর ভালো লাগছে না। এরপর আমি তার শরীরে হাত দিয়েছিলাম। বোঝার চেষ্টা করছিলাম তার শরীরে জ্বর রয়েছে কি না। কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি।
এদিকে সিং বারবারই বলছিল ভালসাদ স্টেশনে নামতে চাইছি। আমি আগেই ডিউটি থেকে ছুটি চাইছি। তবে মীনা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন দু তিন ঘণ্টার মধ্য়েই ট্রেন মুম্বইতে যাবে। তখনই যেন ডিউটি শেষ করেন তিনি।
তবে সিং কিছুতেই বুঝছিল না। এরপর মীনা মুম্বই সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুমে বিষয়টি জানান। সেখান থেকেও ফোন করে তাকে বোঝানো হয়। এরপর এএসআই অ্যাসিস্ট্যান্ট সিকিউরিটি কমিশনার সুজিত কুমারকে ফোন করেন। তিনিও সিংকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সিং কিছুতেই বুঝছিলেন না। এমনটাই জানিয়েছেন ওই আরপিএফ কনস্টেবল।
তিনি বলেন, কনস্টেবল চেতন সিটে বলে বিশ্রাম নিচ্ছিল। আমি পাশেই বসেছিলাম। আচমকাই সে উঠে পড়ে। এরপর আমার রাইফেলটা জোর করে নিতে যায়। আমি দিতে চাইনি। তখন আমার গলা টিপে ধরে।
এরপর আরপিএফ বুঝতে পারে সিং অন্যের রাইফেল নিয়ে নিয়েছে। অন্যরা তাকে তাড়া করে ধরে ফেলেন। এরপর রাইফেল ফেরৎ দেন সিং। কিন্তু তখনও রাগ কমেনি। তখনও মীনা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি বোঝেননি। এরপর দেখেন সিং তার রাইফেলের সেফটি ক্যাচ খুলছেন। তখনই তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন আচার্য্য।
তারপর ভোর ৫টা নাগাদ একজন ব্যাচমেট ফোন করে জানান মীনাকে গুলি করেছে সিং। এরপর আমি ভয় পেয়ে যাই। আতঙ্কে বাথরুমের মধ্য়ে লুকিয়ে পড়ি। তার দশ মিনিট পরে দেখা যায় মীরা রোড আর দাহিসরের মাঝে দাঁড়িয়ে পড়েছে ট্রেনটি। ততক্ষণে ট্রেনে পরপর চারজনের মৃত্য়ু।