আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। যে ঘটনা নিয়ে গোটা রাজ্যজুড়ে চলছে প্রতিবাদ। আজ, সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি হয়। এই আবহে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চে চতুর্থ শুনানি হল। এখানেই আজ, সোমবার নির্যাতিতার পরিচয় সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস করা হচ্ছে বলে সরব হন প্রধান বিচারপতি। তারপরই নির্দেশ দেন এই বিষয়ে একজন নোডাল অফিসার নিয়োগ করতে হবে। আর তা করবে কেন্দ্রীয় সরকার।
নির্যাতিতার পরিচয় নিয়ে নানা গান, কবিতা থেকে শুরু করে ছবির সঙ্গে সেলফি নিয়ে প্রতিবাদ করা হচ্ছে। তার জেরে পরিচয় প্রকাশ হয়ে যাচ্ছে। যা আইন অনুযায়ী করা যায় না। এবার সেটা নিয়ে কড়া নির্দেশ দিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি বলেন, ‘আমরা আগেই এই ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছিলাম। এখন আইন কার্যকর করার দায়িত্ব যাদের, তারা সেই কাজ করবে। বারবার নির্যাতিতার ছবি, নামের ব্যবহার সন্তানহারা বাবা–মাকে ব্যথিত করছে। তাই নোডাল অফিসার নিয়োগ করতে হবে কেন্দ্রকে।’ আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার বলেন, ‘নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হলে আমরা তাঁকে জানাতে পারি।’
আরও পড়ুন: রাজ্য সরকারের অনুদানের টাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা, মালদার পুজো কমিটির অভিনব উদ্যোগ
আইনজীবী বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জানান, একাধিক সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যায়, নির্যাতিতার নাম–ছবি দিয়ে পোস্ট করা চলছে। এই বিষয়ে কি একজন নোডাল অফিসার নিয়োগ করা যায়! কৌঁসুলি করুণা নন্দীর বক্তব্য, হিন্দি গানের সঙ্গে রিলস তৈরি করা পর্যন্ত চলছে। এই সব শোনার পর প্রধান বিচারপতির জবাব, কেন্দ্রকে একজন নোডাল অফিসার নিয়োগ করতে হবে। আর প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ছবি মুক্তি বন্ধ করতে চাইলে আইনি পন্থা নিতে হবে।’ এই কথা প্রধান বিচারপতি বলেছেন যখন আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার বলেন, ‘আগামিকাল ইউটিউবে এই ঘটনার কথা উল্লেখ করে একটি ছবি মুক্তি পেতে চলেছে।’
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা সওয়াল করেন, নির্যাতিতার বিরুদ্ধে এভাবে অপমান করার উদ্যোগের অবসান হোক। প্রধান বিচারপতি বলেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার সমস্ত মিডিয়া পোস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করুক।’ আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার সুপ্রিম কোর্টকে বলেন, ‘ইউটিউব মুভিতেও এই কাণ্ড উঠে এসেছে। আগামীকাল তা মুক্তি পাবে। আর যেখানে বলা হয়েছে, নির্যাতিতার জীবনের উপর আধারিত এই ছবি।’ সলিসিটার জেনারেল বলেছেন, ‘অভিযোগ জানানোর জন্য আমরা একটি নম্বর জানাব’। এই নিয়ে আইনজীবী মহেশ জেঠমালানির কথায়, ‘প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার নিজে একবার নির্যাতিতার নাম বলেছেন। তা সত্ত্বেও কোনও শুনানি হয়নি।’ নোডাল অফিসার নিয়োগ ও অভিযোগ জানাতে ই–মেল আইডি দেওয়ার দাবি আইনজীবী করুণা নন্দীর। তবে শেষে প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন, ‘আমরা নির্দেশ দিয়েছি ছবি ও নাম ব্যবহার বন্ধের। অবিলম্বে পদক্ষেপ করা উচিত।’