প্রাক্তন সেনা সদস্যের প্রয়াণে শোক প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার নিজের রাজৌরি জেলার বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ৯৩ বছরের হাবিলদার (অবসরপ্রাপ্ত) বলদেব সিং। সেনায় থাকাকালীন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চারটি যুদ্ধে লড়াই করেছিলেন তিনি।
বুধবার বলদেবের প্রয়াণে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে শোক প্রকাশ করেন মোদী। লেখেন, 'দেশের প্রতি তিনি যে সেবাব্রত পালন করেছেন, আগামী বহু বহু বছর ধরে তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি ছিলেন সাহস ও ধৈর্য্যের প্রকৃত প্রতীক। দেশের প্রতি তাঁর অটল নিষ্ঠা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।'
প্রসঙ্গত, মোদী নিজেও হাবিলদার (অবসরপ্রাপ্ত) বলদেব সিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এক্স পোস্টে নিজের সেই স্মৃতি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। লেখেন, ‘কয়েক বছর আগে নওশেরায় তাঁর সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছিল। সেকথা আমার মনে আছে। তাঁর পরিবার ও অনুরাগীদের প্রতি আমার সমবেদনা জানাই।’
জম্মুতে প্রতিরক্ষা বিভাগের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল সুনীল বার্টওয়াল এই প্রসঙ্গে বলেন, 'গভীর বেদনার সঙ্গে আমরা ঘোষণা করছি, ভারতীয় সেনাবাহিনীর শ্রদ্ধেয় সমর নায়ক এবং প্রবীণ হাভিলদার (অবসরপ্রাপ্ত) বলদেব সিং ৯৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন।'
তিনি আরও জানান, ২০২৫ সালের ৬ জানুয়ারি নিজের বাসভবনেই মৃত্যু হয়েছে হাবিলদার বলদেব সিংয়ের। তাঁর মৃত্যু স্বাভাবিক। ১৯৩১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর নওশেরার নওনিহাল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলদেব সিং।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে, ১৯৪৭-৪৮ সালে নওশেরা ও ঝাঙ্গার যুদ্ধের সময় ৫০তম প্যারা ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার উসমানের নেতৃত্বে বালক সেনাবাহিনীতে যোগ দেন বলদেব সিং।
উল্লেখ্য, এই বালক সেনা হল - ১২ থেকে ১৬ বছর বয়সী স্থানীয় বালক ও কিশোরদের নিয়ে গঠিত একটি দল। যা সেই যুদ্ধের সময়, গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য পণ্য সরবরাহকারী ও বার্তাবাহী হিসাবে কাজ করত। সেই বাহিনীর সাহসিকতার স্বীকৃতিস্বরূপ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু বালক সৈনিকদের গ্রামোফোন, ঘড়ি এবং পরবর্তীতে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদানের সুযোগ দিয়ে তাদের সম্মানিত করেছিলেন।
বলদেব সিং ১৯৫০ সালের ১৪ নভেম্বর ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং প্রায় তিন দশক ধরে নিষ্ঠা ও বীরত্বের সঙ্গে দেশের সেবা করেন। ১৯৬১, ১৯৬২ এবং ১৯৬৫ সালের ভারত-পাক যুদ্ধ-সহ একাধিক যুদ্ধে তাঁর বিশিষ্ট অবদান ছিল।
১৯৬৯ সালের অক্টোবরে অবসর গ্রহণের পর, ১৯৭১ সালের ভারত-পাক যুদ্ধের সময় তাঁকে ফের বাহিনীতে ডেকে পাঠানো হয়। এবং পুরোপুরিভাবে অসমারিক জীবনে ফিরে যাওয়ার আগে অতিরিক্ত আট মাস সেনার দায়িত্ব পালন করেন তিনি।