'সহমরণের চুক্তি' করেও শেষ রক্ষা হল না। প্রাণের মায়ায় নিহত প্রেমিকার দেহ ফেলেই চম্পট দিলেন প্রেমিক! এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকতে হল মধ্যপ্রদেশের ছাতারপুরের বাসিন্দাদের।
গত শুক্রবারের ঘটনা। অভিযোগ, ২৪ বছরের এক তরুণীকে খুন হতে হয় তাঁরই প্রেমিকের হাতে। পরবর্তীতে, ধরা পড়ার পর ওই যুবক পুলিশকে জানান, প্রেমিকাকে গুলি করে খুন করার পর তাঁর নিজেকেও গুলি করে একইভাবে শেষ করে ফেলার কথা ছিল! তেমনই নাকি 'চুক্তি' হয়েছিল ওই যুগলের মধ্যে!
কিন্তু, প্রেমিকাকে খুন করতে পারলেও নিজেকে আর মারতে পারেননি ওই যুবক। প্রাণের ভয়ে এবং পরে পুলিশের ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন ঘটনাস্থল ছেড়ে। কিন্তু, শেষমেশ পুলিশ তাঁকে ধরে ফেলে এবং তিনিও নিজের দোষ কবুল করেন! পুলিশের তরফে অন্তত এমনটাই দাবি করা হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ।
পুলিশের তদন্তে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা অত্যন্ত মর্মান্তিক ও দুঃখের। এই ঘটনায় নিহত তরুণীর নাম মীরা। তাঁর সঙ্গে গত প্রায় তিন বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল সচিন যাদবের। মীরা স্নাতকোত্তরের পড়াশানো শেষ করে বিএড পড়ছিলেন।
সমস্যা শুরু হয় যখন দুই পরিবারের সদস্যরা তাঁদের এই সম্পর্কের কথা জানতে পারেন। তাঁরা শুরু থেকেই এই সম্পর্কের বিরুদ্ধে চলে যান। শুধু তাই নয়, বাড়ির মেয়েকে যাতে তাঁদের পছন্দের ছেলের সঙ্গেই বিয়ে দেওয়া যায়, তা নিশ্চিত করতে তড়িঘড়ি অন্যত্র মীরার বিয়ে পাকা করে দেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
এর ফল হল মারাত্মক। সচিনের দাবি, মীরার বিয়ের পাকা হওয়ার পরই তাঁরা ঠিক করেন, একসঙ্গে বাঁচতে না পারলে অন্তত একসঙ্গে মরবেন! তাহলে কেউ আর তাঁদের আলাদা করতে পারবে না!
সেই মতো, স্থানীয় সাতাল রোডে শুক্রবার দুপুরে সচিনের ভাড়া বাড়িতে মীরা ও সচিন দেখা করেন। কথা ছিল, সচিন মীরাকে গুলি করে নিজেকেও গুলি করবেন।
দুপুর দেড়টা নাগাদ হঠাৎই সংশ্লিষ্ট বাড়ির বাসিন্দারা দু'টি গুলির শব্দ শুনতে পান। তাঁরা ছুটে আসেন। দেখেন মেঝেয় রক্তাক্ত অবস্থায় মীরা পড়ে রয়েছেন। তাঁর মাথায় যে গুলি করা হয়েছে, তা দেহ দেখেই বোঝা যাচ্ছে! এবং ততক্ষণে মীরা যে আর বেঁচে নেই, সেটাও বাসিন্দাদের বুঝতে অসুবিধা হয়নি।
মীরার মৃতদেহের সামনেই সচিন হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ধরে দাঁড়িয়ে আছেন এবং ঠকঠক করে কাঁপছেন! বাড়ির বাকি বাসিন্দারা এই দৃশ্য দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান। সচিন তাঁদের সব জানান এবং দাবি করেন তিনি নিজেকে পুলিশের হাতে তুলে দেবেন।
যদিও বাস্তবে তিনি তেমনটা করেননি। সচিন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। পরে পুলিশ তাঁকে নওগাঁও এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।