একের পর এক দানের বাক্স খুলতেই হুড়মুড়িয়ে নীচে পড়ল রাশি রাশি টাকা! তাতে দিশি নোট যেমন ছিল, তেমনই ছিল প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা। আর ছিল কাঁড়ি কাঁড়ি সোনার গয়না। সেই টাকা তারপর ভরা হয় ২৮টি বস্তায়। টাকা গুনতে বসেন ৪০০-রও বেশি মানুষ! সব শেষে জানা যায়, সব মিলিয়ে দানের বাক্সে জমা পড়া নগদ টাকারই পরিমাণ - ৯ কোটি ১৭ লক্ষ ৮০ হাজার ৬৮৭ (বাংলাদেশি মুদ্রায়)! এবং এই বিপুল পরিমাণ ধনরাশি জমা হয়েছে মাত্র গত চারমাসে।
এই ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদে। শনিবার (১২ এপ্রিল, ২০২৫) এই মসজিদের ১১টি দানবাক্স খোলা হয়। তাতে বেরিয়ে আসে টাকার পাহাড় ও অন্য়ান্য ধন সম্পদ! যার অধিকাংশই হল - বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার!
এরপর শুধুমাত্র বাংলাদেশি মুদ্রাগুলি (নোট) আলাদা করে ২৮টি বস্তায় ভরা হয়। সেগুলি নিয়ে যাওয়া হয় মসজিদ চত্বরের দোতলায়। পরে সেখানেই শুরু হয় টাকা গোনার কাজ।
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, এই টাকার গোনার কাজে অংশ নেন মসজিদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য, মসজিদ চত্বরে অবস্থিত মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক এবং পড়ুয়ারা, পাশেই অবস্থিত জামিয়া এমদাদিয়া মাদ্রাসার পড়ুয়ারা, এবং রূপালী ব্যাঙ্কের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। সব মিলিয়ে গোনার লোকের সংখ্যা ছিল ৪০০-রও বেশি!
প্রকাশ্যে এত টাকা যেখানে গোনা হচ্ছে, এবং এত সম্পদ যেখানে কার্যত ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে, সেখানে নিরাপত্তাও একটি বড় বিষয়। তাই যখন দানবাক্স খোলা বা টাকা গোনার কাজ চলছিল, সেই সময় সেখানেই উপস্থিত ছিলেন - কিশোরগঞ্জের জেলাশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান ও পুলিশ সুপার মহম্মদ হাসান চৌধুরী।
বিপুল পরিমাণ এই টাকা গোনার কাজ শেষ হয় এদিন বিকেল পৌনে ছ'টা নাগাদ। গণনা যে শেষ হয়েছে এবং ৯ কোটিরও বেশি নগদ জমা করা হয়েছে, সেকথা জানান রূপালী ব্যাঙ্কের কিশোরগঞ্জ শাখার অ্য়াসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) রফিকুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, এর আগে পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলা হয়েছিল গত বছরের ৩০ নভেম্বর (২০২৪)। সেবার মাত্র ৩ মাস ১৪ দিনের মধ্যেই দানের বাক্সে জমা পড়েছিল রেকর্ড পরিমাণ নগদ - ৮ কোটি ২১ লক্ষ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা (বাংলাদেশি মুদ্রা)। এছাড়া, সেবারও প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা ও সোনার গয়না বাক্সে ফেলে যাওয়া হয়েছিল। তথ্য বলছে, বর্তমানে পাগলা মসজিদের অ্যাকাউন্টে জমা রয়েছে ৮০ কোটি ৭৫ লক্ষ ৭৩ হাজার ৫৭৬ টাকা।