৪৫ দিনে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজৌরির বুধল গ্রামে রহস্যজনক ভাবে ১৬ জনের মৃত্যু হয়।গত বছর থেকে শুরু হওয়া এই ঘটনার নেপথ্যের কারণ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে।এই আবহে জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায় রাজৌরির বুধল গ্রামের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিধায়করা। অন্যদিকে, রাজ্য সরকার জানিয়েছে, এলাকা থেকে সংগৃহীত নমুনায় বিষাক্ত পদার্থ পাওয়া গেছে।
বুধবার জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে বুধলের বিধায়ক জাভেদ ইকবাল চৌধুরী তার নির্বাচনী এলাকায় অব্যক্ত মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানান।তিনি বলেন, ‘নমুনাগুলিতে বিভিন্ন ধরণের বিষাক্ত পদার্থ পাওয়া গেছে। মনে হচ্ছে ট্রাক বোঝাই বিষাক্ত পদার্থ দিয়ে গ্রামবাসীদের বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল। জম্মু ও কাশ্মীরে শান্তি নষ্ট করার জন্য বৃহত্তর ষড়যন্ত্র করা হয়েছে ।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই মৃত্যুর ঘটনাগুলিকে কুলগাম এবং কাঠুয়ার ঘটনা থেকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখা উচিত নয়। এটি শান্তি বিঘ্নিত করার প্রচেষ্টা বলে মনে হচ্ছে। এই মৃত্যুর কারণ উদঘাটনের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্তের প্রয়োজন।
এদিকে, বিধায়ক সুরঙ্কোট চৌধুরী মুহাম্মদ আকরাম সিবিআই তদন্তের দাবিকে সমর্থন করেছেন। সিপিআই(এম) বিধায়ক মুহাম্মদ ইউসুফ তারিগামিও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘এতগুলো মৃত্যুর নেপথ্যে অদৃশ্য যে শক্তি লুকিয়ে রয়েছে, তাঁকে টেনে বার করতে হবে। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক যে মৃত্যুর কারণ এখনও অজানা। আজ সেখানে যা ঘটেছে তা আগামীকাল যেকোনো জায়গায় ঘটতে পারে।’ এরপরই জম্মু ও কাশ্মীরের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাকিনা ইত্তু বলেন, ‘আমরা যতকুটু সম্ভব তা করেছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এই ঘটনার তদন্ত করছে। তদন্ত শেষ হওয়ার পরে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।তবে কোনও সংক্রমণের কারণে ১৬ জনের মৃত্যু হয়নি।
গত জানুয়ারিতে জানা গিয়েছিল, বুধল গ্রামে গত ৪৫ দিনে বেশ কয়েক জন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের কারও জ্বর, বমি বমি ভাব, গায়ে ব্যথা, জ্ঞান হারানোর মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছল। সেই উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন অনেকে। তাঁদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়। তবে কারও মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট নয়।এর আগে এই বিষয়ে জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসনের তরফে জানানো হয় গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মৃতদের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই নমুনার রিপোর্ট থেকে বোঝা যায়, কোনও ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণের কারণে ঘটেনি।এরপরই তদন্ত কমিটি গঠন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তদন্তকারী দলের নেতৃত্বে থাকবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একজন উর্ধ্বতন আধিকারিক। এছাড়াও দলে রয়েছেন স্বাস্থ্যও পরিবার কল্যাণ, রাসয়নিক ও সার, কৃষি এবং জল সম্পদ মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞেরা। পাশাপাশি, পশুপালন, খাদ্য নিরাপত্তা এবং ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরাও সাহায্য করবেন তদন্তে।