মঙ্গল শোভাযাত্রা। বাংলাদেশে নববর্ষের আয়োজনের সঙ্গে বহু বছর ধরে যুক্ত এই অনুষ্ঠান। বেশ রঙিন হয় এই পদযাত্রা। দলে দলে মানুষ বের হন রাস্তায়। আনন্দে উচ্ছাসে, রূপে রঙে বরণ করা হয় বাংলা নতুন বছরকে। আর এবার ‘নতুন’ বাংলাদেশে কার্যত 'ফতোয়া' জারি করল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মহম্মদ ফয়জুল করিম জানিয়েছেন, বাংলা নববর্ষ উদযাপনের কোনও আয়োজনে ইসলাম অসমর্থিত কিছু থাকা যাবে না। মঙ্গল শোভাযাত্রা নামে কোনও কিছু করা যাবে না। এমনটা উল্লেখ করেছেন তিনি।
বিবৃতিতে বলা হয়, পয়লা বৈশাখ ঋতূ সম্পর্কিত একটি বিষয়। এই অঞ্চলের মানুষের কৃষিকাজ, ব্যবসা বাণিজ্য, বিয়ে শাদি সহ অনেক কিছুই ঋতূর সঙ্গে সম্পর্কিত। সেজন্য় বাদশাহ আকবর ইসলামি বর্ষপঞ্জিকাকে ভিত্তি করে সৌরবর্ষ গণনার জন্য বাংলা সন প্রবর্তন করেছিলেন। এই সনের প্রবর্তনের সঙ্গে মুসলমানদের ইতিহাস ঐতিহ্য জড়িত। একই সঙ্গে এই অঞ্চলের মানুষ হাজার বছর ধরে মুসলমান হওয়ার কারণে তাদের আচার প্রথা সংস্কৃতিতে ইসলামবিরোধী কোনও কিছুর অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। সেকারণে বাংলা নববর্ষের উদযাপনে কোনও আয়োজনে ইসলাম সমর্থিত কিছু থাকা যাবে না। বিবৃতি জারি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে জানা গিয়েছে।
এমনকী ফয়জুল করিম জানিয়েছেন, নববর্ষের দিন মানুষ শালীনতা, ইতিহাস ঐতিহ্য সমর্থিত পন্থায় নানা আয়োজন করতেই পারে। কিন্তু সেই কোনও যাত্রা করতে তাতে মঙ্গল হবে এমন বিশ্বাস করলে বা ধারণা করলে পরিষ্কারভাবে তা গুনাহর দিকে নিয়ে যাবে। তাই মঙ্গল শোভাযাত্রা নামে কোনও কিছু অবশ্যই করা যাবে না। মঙ্গল শব্দ ও ধারণা অবশ্যই বাদ দিতে হবে।
এমনকী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেও বলা হয়েছে মঙ্গল শব্দ ও ধারনা বাদ দিতে হবে এই শোভাযাত্রার আয়োজনের থেকে।
আর এখানেই প্রশ্ন মঙ্গল শোভাযাত্রায় মঙ্গল থাকবে না এটা কীভাবে সম্ভব?
বাংলাদেশের বছরের পর বছর ধরে এই মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। বহু ছাত্রছাত্রী নতুন শাড়ি, জামাকাপড়, পাঞ্জাবি পরে বের হন। অত্যন্ত রঙিন হয় এই শোভাযাত্রা। নান ধরনের প্রতিকৃতি নিয়ে, ট্যাবলো নিয়ে বের হয় এই মঙ্গল শোভাযাত্রা। একেবারে অন্যরকম ব্যাপার। তবে এবার সেই মঙ্গল শোভাযাত্রার ক্ষেত্রে কার্যত ফতোয়া জারি করা হচ্ছে বাংলাদেশে। তবে শেষ পর্যন্ত এই শোভাযাত্রা কেমন হয় সেটাই দেখার।