বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > ‘আপনি কি ইতিহাসবিদ?’ তামিল-কন্নড় ভাষা বিতর্কে কমল হাসানকে ভর্ৎসনা আদালতের
পরবর্তী খবর
‘আপনি কি ইতিহাসবিদ?’ তামিল-কন্নড় ভাষা বিতর্কে দক্ষিণী সুপারস্টার কমল হাসানকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছে কর্ণাটক হাইকোর্ট। বিতর্কিত মন্তব্যের জন্যে বেশ কিছুদিন ধরেই খবরের শিরোনামে রয়েছেন কমল হাসান। সম্প্রতি চেন্নাইয়ে 'ঠগ লাইফ'-এর অডিয়ো লঞ্চে নিজের মাতৃভাষা তামিলের প্রতি আবেগ দেখাতে গিয়ে কমল হাসান কন্নড় ভাষাকে অসম্মান করে বসেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এরপর থেকেই কন্নড়পন্থী সংগঠনগুলি রোষের মুখে পড়েছে। শুধু তাই নয়, অভিনেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হওয়ার পাশাপাশি আসন্ন ছবি ‘ঠাগ লাইফ’ও নিষিদ্ধ হয়েছে কর্ণাটকে।
ভাষা বিতর্কের মধ্যে কর্ণাটকে 'ঠগ লাইফ'-এর মুক্তির আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টে দ্বারস্থ হন অভিনেতা। কিন্তু মঙ্গলবার এই মামলার শুনানিতে আদালতের ভর্ৎসিত হয়েছেন কমল হাসান। তাছাড়াও তাঁকে জনগণের অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য বাকস্বাধীনতার অধিকারের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে আদালত। অভিনেতাকে তীব্র ভর্ৎসনা করে বিচারপতি এম নাগাপ্রসন্নন বলেন, ‘কারও ভাবাবেগে আঘাত করার অধিকার নেই কোনও নাগরিকের। জল, জমি এবং ভাষা, নাগরিকদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভাষার ভিত্তিতেই এই দেশে পৃথক প্রদেশ সৃষ্টি হয়েছে।’
আরও পড়ুন-‘ভারতের রাষ্ট্রভাষা কী?’ কেন্দ্র-DMK সংঘাতের মাঝে স্পেনে ঠান্ডা মাথায় ধারালো জবাব কানিমোঝির
একজন মেগাস্টার হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো এমন মন্তব্য করতে পারেন, সে প্রসঙ্গে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় কমল হাসানকে। বিচারপতি বলেন, 'কোনও ভাষার উৎস অন্য কোনও ভাষা হতে পারে না। আপনার দাবির নেপথ্যে তথ্যপ্রমাণ কোথায়? আর এর জেরে কী ঘটল? সম্প্রীতি নষ্ট হল। আর কর্ণাটকের বাসিন্দারা আপনার কাছ থেকে কী চেয়েছে? শুধুমাত্র ক্ষমা। আর এমন পরিস্থিতি তৈরি করে আপনি বলছেন ক্ষমা চাইবেন না? কীসের ভিত্তিতে কর্ণাটকবাসীদের ভাবাবেগে আঘাত করলেন আপনি? আপনি ভাষাবিদ না ইতিহাসবিদ?'
বিচারপতি আরও বলেন, 'রাজাগোপালাচারীও তো এই রকম এক মন্তব্য করে ফেলেছিলেন। কিন্তু তিনি ক্ষমা চেয়ে নেন। কিন্তু তা না করে এখন কোর্টে এসেছেন প্রোটেকশন চাইতে? আপনি ক্ষমা চাইবেন না, আর ভাববেন কর্ণাটকে আপনার সিনেমা চলবে?’
এরপরেই কমল হাসানের আইনজীবী আদালতে বলেন, অভিনেতা এই মন্তব্যে কাউকে আঘাত দিতে চাননি। কেউ আঘাত পাবেন, তা তিনি বুঝতে পারেননি। তা শুনে বিচারপতি বলেন, ‘পরিস্থিতির শিকার হওয়া আর পরিস্থিতি তৈরি করা, এক জিনিস নয়। আপাতত সমাধানের একটাই রাস্তা, ক্ষমা চাওয়া। তবে আমরা শুধু এই নির্দেশ দিতে পারি, তিনি কর্ণাটকে প্রোটেকশন পাবেন, না পাবেন না।’
আরও পড়ুন-‘ভারতের রাষ্ট্রভাষা কী?’ কেন্দ্র-DMK সংঘাতের মাঝে স্পেনে ঠান্ডা মাথায় ধারালো জবাব কানিমোঝির
যদিও অভিনেতা এর আগে ক্ষমা চাওয়ার বিরোধিতা করে বলেছিলেন যে, 'তিনি যদি ভুল করেন অবশ্যই ক্ষমা চাইবেন। কিন্তু আমার মন্তব্যের অন্যরকম মানে বের করা হয়েছে। আমি অন্যের ভাষাকে কোনওভাবে আঘাত করতে চাইনি। কারণ আমি তামিলের মতই অন্য ভাষার মানুষকে আপন বলে মনে করি। আমার মনে হয় না রাজনীতি ব্যক্তিত্বদের ভাষা নিয়ে কোনও কথা বলার অধিকার আছে, আমারও নেই।' এবার দেখা যাক, আদালতের নির্দেশে কমল হাসান ক্ষমা চান কিনা।