বাংলা নিউজ > বায়োস্কোপ > ওয়ার্ল্ড সিনেমা এবং সত্যজিৎ বিশ্লেষণে ল্যাডলী মুখোপাধ্যায়
পরবর্তী খবর

ওয়ার্ল্ড সিনেমা এবং সত্যজিৎ বিশ্লেষণে ল্যাডলী মুখোপাধ্যায়

মগ্ন আপন খেয়ালে। ছবি ফেসবুক।

এই মুহূর্তে ওয়ার্ল্ড সিনেমা নিয়ে কাজ করছেন প্রখ্যাত চিত্র পরিচালক এবং সিনেমা বিশেষজ্ঞ ল্যাডলী মুখোপাধ্যায়। তাঁর বিশ্লেষণে সত্যজিৎ রায়। ফোনেই HT Bangla-কে শোনালেন  সিনেমা তৈরির ভিন্ন স্বাদের গল্প।

আগন্তুকের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে সব কথা

প্রথমেই বলব ওঁর শেষ ছবি আগন্তকের কথা। বলা যায় প্রায় প্রায়শ্চিত্ত করার মতই লোকসংস্কৃতি  নিয়ে, রাজনীতি  নিয়ে অনেক ফ্রেম পজিটিভ কথা বলেছেন। এটা ঠিক সত্যজিৎ রায় নিয়ে আমি তেমন ভাবে কথাও লিখিনি বা মন্তব্য করিনি। এদিক ওদিক কখনও টেলিভিশনে বা ছাত্রছাত্রী পড়াতে গিয়ে সত্যজিৎ রায়ের কথা বলেছি কথা প্রসঙ্গে। কেন লিখিনি বা বলিনি  তার পেছনে একটা বড় কারন অবশ্যই রয়েছে, কাউকে ছোট না করেই বলছি, সত্যজিৎ রায় নিয়ে আমাদের দেশে, বিশেষকরে বাংলা ভাষায় এত মানুষ লিখেছেন, প্রচুর অভিজ্ঞ মানুষরা লিখেছেন, এবং অনেক পণ্ডিত ব্যক্তিরাও অনেক কিছুই  লিখে এবং বলে ফেলেছেন। তাই আমার মনেহয় আর নতুন করে বলার বোধহয় কিছু নেই। 

হাতে কলমে মেকিংটা জানা

যখন প্রথম ছবি করব বলে ঠিক করি এবং ছবি করতে আসি তখন আমার নিজস্ব একটা কনসেপ্ট ছিল, একটা হল- ছবি সংক্রান্ত প্রচুর পড়াশোনা করা, আরেকটা হল, ইন্ডাস্ট্রিতে গিয়ে একেবারে ফ্লোরে থেকে অ্যাসিস্টেন্টের কাজ করে, শুটিংয়ের ফাই-ফরমাশ খেটে, সারাক্ষণ ফিল্মটার সঙ্গে যুক্ত থেকে হাতে কলমে মেকিংটা জানা। এই পড়াশোনাটা করতে গিয়ে যেটা জানলাম, যদি প্রশ্ন করা হয় ছবি তৈরি করার শুরুর দিকটা সম্বন্ধে, তাহলে দেখা যাবে সত্যজিৎ রায়কে বাদ দিলে অধিকাংশ পরিচালক ছবির কেরিয়ার শুরু করেছেন ডকুমেন্টারি দিয়ে। বা ডকুমেন্টারি নিয়ে পড়াশোনা ও চর্চা করে  তারপর একটা কাহিনি চিত্র বানিয়েছেন। সত্যজিৎ রায়ের ক্ষেত্রে কিন্তু  এই চলচিত্রের পড়াশোনাটার বেশিরভাগটাই শান্তিনিকেতনে। বিশ্বভারতীর লাইব্রেরিতে তিনি প্রথম আবিষ্কার করেন দারুণ দারুণ সব ফিল্ম মেকিংয়ের ইন্টারেস্টিং বই। এই বই গুলোর বেশিরভাগই ছিল ডকুমেন্টারির ফিল্ম সম্পর্কিত। তো এই সব ঘটনাগুলো থেকে আমার মনে হয়েছে সত্যজিৎ রায়ের ছবির যে ভাষা, যে স্টাইলাইজেশন, যে প্রকরণ তা আমার ফিল্ম মেকিংয়ের ভাষা নয়। আমি তা সবসময় ছুঁতে পারছি না। কিন্তু যেটা আমি বুঝতে পারছি সেটা হল, যদি আমি ওই মেথডের মধ্যে দিয়ে যাই তবেই আমি ওই মেথডকে ভাবতে পারব। ফলে আমি অনেক ছোটবেলা থেকেই সত্যজিৎয়ের  বিষয় চলচিত্র  প্রায় মুখস্থ করে ফেলেছিলাম। এর সঙ্গে সঙ্গে ওঁর ছবি দেখে, ওঁর ওপর লেখা অনেক বই পড়ে, এবং অবশ্যই অন্য পণ্ডিতদের  মানুষদের লেখা পড়ে অনেকটাই শিখেছি। 

সিনেমাটা ভাবব কেমন করে

একটা কথা বারবার বলব, ওঁর যে প্র্যাক্টিস, যে ভাবে উনি ছবি গুলোকে নিয়ে কাজ করেছেন সেটা অসম্ভব মেথডিক্যাল। যথাযত পরিকল্পনা এবং প্রপার এক্সিকিউশন। প্রথম কাজ হচ্ছে ‘ভাবা’। সিনেমাটা আসলে ভাবতে হয়। এখানে প্রশ্ন হচ্ছে সিনেমাটা ভাবব কীভাবে? সেটাও কিন্তু আমাদের সত্যজিৎ রায় শিখিয়ে দিয়ে গেছেন। উনি ছবি তৈরি করার পাশাপাশি অনেক লিখেছেন। সেই লেখা, তাঁর বক্তব্য এবং ছবি তৈরির আগে, তৈরির সময় এবং পরে কী ভাবে স্টেপ বাই স্টেপ এগোতে হয়, সবটাই জানা যায়। মন দিয়ে ওঁকে ফলো করলে অনেকটাই শেখা যায়। অবশ্যই তার সঙ্গে মেধার প্রয়োজন।

একটা হলিউড, আর একটা হল মানিক কাকা

তখন আমি আর অপর্ণা সেন একসঙ্গে কোনও একটা প্রোজেক্ট করছি। একদিন আড্ডা হচ্ছিল ওয়ার্ল্ড সিনেমা নিয়ে, তখন অপর্ণা সেন  বলছিলেন, ‘দেখ, দু’টো দিক রয়েছে, একটা হলিউড, আর একটা হল মানিক কাকা। হলিউড তো আমরা পারব না, আবার মানিক কাকাও আমরা পারব না। কিন্তু মানিক কাকার কাছ থেকে আমরা কিছু শিখে তো নিতে পারি। এবং ওঁকে অনুসরণ তো করতে পারি।এই মতের সঙ্গে আমার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। সত্যজিৎ রায়ের টেকনিক বা তাঁর কাজ নিয়ে অনেক কিছু ভাববার রয়েছে, তবে সেই টেকনিককে কতটা অনুসরণ করা যায় সেটা বলা মুশকিল। কিন্তু এটা অবশ্যই বলব, ওই যে মেথডিক্যাল কাজ, ওই যে নিপুণ পরিকল্পনা, এবং ওঁর স্ক্রিপ্টের পাশে ছবি এঁকে রাখা, মানে সব কিছু  যথযত ভাবে সাজানো শুটিংয়ের  আগে থেকে। তারমানে বহু আগে থেকে সমস্ত প্ল্যান ছকা থাকত তাঁর মাথায়। হয়ত সামান্য কিছু ডেভালপ করলেও করতেন, কিন্তু বেসিক জায়গাটায় কোনও পরিবর্তন নেই। এটা সত্যজিৎয়ের কাজের স্টাইলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা দিক। 

সত্যজিৎ রায় ছিলেন সমলোচনার বিষয়

আরও একটা দিক বলতে চাই, ৭০ এর দশক। তখন কিন্তু আমাদের গায় রাজনৈতিক আঁচ লাগতে শুরু করেছে। সেই সময় আমরা একটা সম্মিলিত ভাব নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি। তখন আমরা ক্রিটিসিজমে বিশ্বাস করতাম। সত্যজিৎ রায় ছিলেন সমলোচনার বিষয়। সেই সময় তিনি নাগরিক জীবন নিয়ে ছবি তৈরি করছেন একটার পর একটা। ভারতবর্ষের কথা ছেড়ে দিলাম, আমাদের রাজ্যের যে ততকালীন রাজনৈতিক উত্তাপ বা যে মেরুকরণ তৈরি হয়েছিল তাতে কিন্তু সত্যজিৎ রায় কোনও কথা বলেননি।

ল্যাডলী মুখোপাধ্যায়
ল্যাডলী মুখোপাধ্যায়

আগন্তুকে অনেক কিছু বলতে চেয়েছেন

আবার আমরা কিন্তু সত্যজিৎ রায়কে কখনও কোনও অমানবিক বিষয়য়ের মধ্যে জড়াতে দেখিনি। যেটা এখন সবসময় দেখতে হয় যে কোনও না কোনও দলকে সমর্থন করতেই হয়। গণশত্রুতে দেখা যায় কিছু রাজনৈতিক কথা উনি বলতে চাইছেন, হীরক রাজার দেশেতেও তাই। এবং শেষ ছবি আগন্তুকে অনেক কিছু বলতে চেয়েছেন। আমার মনে হয়,যেমন এই যে উনি নাগরিক জীবন নিয়ে ছবি করেছেন তার একটা কাউন্টার পয়েন্ট রাখলেন। এই যে আদিবাসী জীবন, এই যে লোকজীবন চর্চা, এই যে তাঁদের খাদ্য খাবারের জন্য লড়াই, সমস্থতটাই পজিটিভ। এই যে ইকোলজিক্যল ডিজাস্টার তাই নিয়ে উনি কথা বলেছেন। এই ছবিটার মধ্যে দিয়ে কিন্তু তাঁর নাগরিক জীবন দর্শন, রাজনৈতিক দর্শন অনেক কিছুই পরিষ্কার করে দিয়েছেন।

শান্তি মিছিলে তাঁর গানই গাই

মানিক বাবু অনেক জায়গায় বলেছেন, অন্য কোনও ভাষায় ছবি তিনি তৈরি করতে চাননি। যে বিষয়টা তাঁর নয় সেই নিয়ে কাজ করা মানে বেকায়দায় পড়ে যাওয়া। যেমন রবীন্দ্রনাথ এবং রবীন্দ্র সংস্কৃতির মধ্যে দিয়েই ওঁর বেড়ে ওঠা, এবং পড়াশোনা। তাই রবীন্দ্রনাথ নিয়ে খুব সাবলীল ছিলেন। পাশ্চাত্য সঙ্গীত নিয়ে যতটা ভেবেছেন লোকসঙ্গীত নিয়ে কিন্তু ততটা প্রভাবিত হননি। নিজের বিষয় গুলো্র এক্সিকিউশন নিয়ে খুব সচেতন ছিলেন কিন্তু তাতেও সমলোচিত হয়েছেন। কোনও ছবিতে বা বক্তব্যে সোজাসুজি পলিটিক্যল বিষয় না তুলে ধরলেও, আজও শান্তি মিছিলে বা যুদ্ধ বিরোধি মিছিলে আমরা কিন্তু তাঁর গানই গাই, ‘তোরা যুদ্ধ করে করবি কি তা বল...?’

 

Latest News

ভারতে ৪৮৪৩ কোটি টাকার জালিয়াতি, সেবির কোপে মার্কিন ট্রেডিং ফার্ম রাই-অনির্বাণের ডিভোর্স দিয়েই কি শেষ হবে মিঠিঝোরা? কী হবে অন্তিম পর্বে, ফাঁস গল্প চাপড়ায় TMC কর্মীর হাতে আক্রান্ত কলেজের অধ্যক্ষ, আতঙ্কে ছাড়তে চান চাকরি বিবাহিত জীবন কতদিন টিঁকবে? উত্তর লুকিয়ে এই রেখার গভীরে গিলের ট্রিপল সেঞ্চুরি মিস! আক্ষেপ যাচ্ছে না ‘মেন্টর’ যুবরাজের! হতাশ যোগরাজ সিংও ‘এ কারণেই লোক…’, বউকে এসব কী লিখে পাঠালেন মুসলিম বর জাহির, চ্যাট শেয়ার সোনাক্ষির ১ সীমান্ত, ৩ শত্রু! অপারেশন সিঁদুরে পাকিস্তানকে সাহায্য চিনের, বিস্ফোরক সেনা শনিতে প্রবল বৃষ্টি ৪ জেলায়, ভাসবে আরও ৭টিতে, তারপরও বাংলার কোথায় ভারী বর্ষণ হবে? এক বছর ধরে অপেক্ষা, অবশেষে আলিপুর চিড়িয়াখানায় আসছে সবুজ অ্যানাকোন্ডা ২০০ করার পর নিজের সেলিব্রেশন ভুলে গেলেন শুভমন! গ্যালারি থেকেই মনে করালেন সিরাজ

Latest entertainment News in Bangla

রাই-অনির্বাণের ডিভোর্স দিয়েই কি শেষ হবে মিঠিঝোরা? কী হবে অন্তিম পর্বে, ফাঁস গল্প ‘এ কারণেই লোক…’, বউকে এসব কী লিখে পাঠালেন মুসলিম বর জাহির, চ্যাট শেয়ার সোনাক্ষির কেক কেটে হবু শাশুড়ির জন্মদিন পালন করলেন তিয়াসা, সঙ্গী হলেন সোহেল ‘কার্তিকের সঙ্গেও সুশান্তের মতোই ব্যবহার করা হচ্ছে, ইন্ডাস্ট্রির বড় প্রযোজকরা…’ গানে গানে জমে ক্ষীর দেব-শুভশ্রীর প্রেম! প্রকাশ্যে ‘ধুমকেতু’-র প্রথম গানের টিজার অদ্রিজার জন্মদিন উদযাপন করলেন দেবচন্দ্রিমা! কত বছর বয়স হল নায়িকার? 'চোখ দুটো অসম্ভব সুন্দর…', কাকে জড়িয়ে ধরে মনের কথা জানালেন জিতু? ফাঁস ভিডিয়ো রণবীরের 'রামায়ণ'-এ ঊর্মিলার চরিত্রের প্রস্তাব পেয়েছিলেন বাংলার এই অভিনেত্রী! বাগদান সারলেন অংশুলা! তিন বছর আগে কীভাবে প্রেমে পড়েন অর্জুন কাপুরের বোন? চোখের বড়সড় ক্ষতি, মারাত্মক ব্যথা, হাসপাতালে স্বস্তিকা! এখন কেমন আছেন নায়িকা

IPL 2025 News in Bangla

রাজ কুন্দ্রা ব্ল্যাকমেল করছে! আদালতে দাবি রাজস্থান রয়্যালস কর্ণধার গোষ্ঠীর! সামনে নেই T20! তবু কেন টেস্ট সিরিজ শুরুর আগেই ইংল্যান্ডে গেলেন সূর্যকুমার যাদব? আইপিএল ২০২৫-এ সাফল্যের পর ওজন বেড়েছে বৈভব সূর্যবংশীর! কী বললেন রাহুল দ্রাবিড়? আমি Royal Challenge খাই না! RCBকে নিয়ে কর্ণাটকের উপমুখ্যমন্ত্রীর মজাদার মন্তব্য বেঙ্গালুরুতে RCB সমর্থকদের পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় মুখ খুললেন রাহুল দ্রাবিড়! বিক্রি হতে পারে আইপিএল ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন RCB-র ফ্র্যাঞ্চাইজি: রিপোর্ট প্রীতি জিন্টার প্রশ্ন শুনে অবাক রিকি পন্টিং! কী বললেন পঞ্জাব কিংসের হেড স্যার? চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন সুনীল গাভাসকর বিরাট কোহলির জন্য ক্যাপ্টেনের প্রচলিত রীতি ভাঙলেন RCB-র অধিনায়ক রজত পতিদার অধিনায়ক হিসেবে রোহিত-গিলকে চ্যালেঞ্জ দেওয়া শুরু শ্রেয়সের! বলছেন BCCI কর্তারাই

Copyright © 2025 HT Digital Streams Limited. All RightsReserved.