'কাজের অধিকার শুধু সাংবিধানিক অধিকার নয় এটা যেকোনো মানুষের জন্মগত অধিকার।' এবার টলিপাড়ার কেশসজ্জা শিল্পীর আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় সুর চড়ালেন প্রযোজক রানা সরকার। ওই শিল্পীকে হেনস্থার ঘটনায় দোষীদের শাস্তি চেয়ে সরব হয়েছেন রানা।
ঠিক কী লিখেছেন তিনি?
রানা সরকারের কথায়, ‘Right to practice any profession or occupation’ শিরোনামে রানা লিখেছেন, ‘কাজের অধিকার শুধু সাংবিধানিক অধিকার নয় এটা যেকোনো মানুষের জন্মগত অধিকার। কোনো সংগঠন তার প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মাবলীর শর্তে ও কারো কাজ কেড়ে নিতে পারে না।সরকারি বা অসরকারি কোন প্রতিষ্ঠান যদি disciplinary action নিয়ে কাউকে কাজ থেকে সাসপেন্ড করে তাহলে তাঁকে তার প্রাপ্য পারিশ্রমিকের একাংশ দিতেই হবে। উপার্জনের রাস্তা কাজ কেড়ে নেওয়া যায়না। সরকারি চাকরিতে সাসপেন্ড করা হলেও তাঁকে বেতনের এক তৃতীয়াংশ টাকা দেওয়া হয় এবং তিনমাস পর পুনর্বিবেচনা করা হয়। কাজ চলে যাওয়ার আতংকে কেউ যদি জীবনের চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় তাহলে তার দায়ভার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ। কেশসজ্জা আর্টিস্ট … (নাম গোপন রাখা হল) ঘটনায় দোষীদের শাস্তি হোক।’
রানার এই পোস্টের সঙ্গে সহমত হয়েছেন বহু নেটিজেন। একজন লিখেছেন, ‘একদম ঠিক বলেছেন’। কারোর কথায়, ‘ঠিক কথা বলেছেন’। কারোর মন্তব্য, ‘সঠিক বলেছেন ভাই ভালোবাসা রইলো’। কেউ লিখেছেন, ‘সহমত’।
প্রসঙ্গত, ২১ সেপ্টেম্বর শনিবার, ফেডারেশন ও গিল্ডের যোগসাজশ ও কাজ করতে না দেওয়ার অভিযোগ এনে আত্নহত্যার চেষ্টা করেন এক কেশসজ্জা শিল্পী। এই ঘটনার পরই ক্ষোভে ফেলে পড়েন টলিপাড়ার অনেকেই। ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় সরব হন সুদীপ্তা চক্রবর্তী, শ্রীলেখা মিত্র, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় সহ আরও অনেকেই।
ঠিক কী ঘটেছিল ওই কেশসজ্জা শিল্পীর সঙ্গে? সেবিষয়টি তিনি নিজেই গিল্ডের গ্রুপে ভয়েস নোটের মাধ্যমে জানান।
ভয়েস নোটে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘সবাই জানো আমাকে তিনমাস সাসপেন্ড করা হয়েছিল। যদিও আমি জানি না আমি কী করেছি! তাও অন্যায় স্বীকার করে নিয়ে তিনমাস ঘরে বসেছিলাম। তাতে আমার প্রচুর দেনা হয়ে গিয়েছে। আমার বাড়ির লোন চলে। আমার বর অসুস্থ। আমার মেয়ের পড়াশোনা… (কাঁদতে কাঁদতে) এরপর আমি টুকটাক কাজ করছিলাম, নিজে কাজ ধরেছি ২টো। কিন্তু আমাকে সেক্রেটারি করতে দেয়নি। বলেন., নিজেরা কাজ ধরে কাজ করতে পারবে না। আমি বলেছিলাম, আমার তো বাইরের কাজ হয়, আমি কি কাজ করতে পারব না? সেক্রেটারি বলেছিল, ফোন কোরো। আমি ফোন করেছিলাম কিন্তু আমায় কাজ করতে দেওয়া হয়নি। তাই আমি আজ অনেক কষ্টে সবাইকে বিষয়টা গ্রুপে জানাচ্ছি। কাল থেকে আমার কাজ শুরু ছিল। কিন্তু আমায় আজ হঠাৎ ফোনে ম্যানেজার বলছে, তুমি ওখানে কাজ করতে পারবে না। গিল্ড (হেয়ার ড্রেসার গিল্ড) থেকে ফেডারেশনকে জানিয়েছে। আমি অরিজিতদাকে ফোন করতে উনি বললেন, হ্য়াঁ, এটা বলেছে তোমায় যেন কাজে না নেওয়া হয়। গিল্ড (হেয়ার ড্রেসার গিল্ড) তোমায় যা কাজ দেবে তাই করবে। এবার তোমরা বলো, আমি কী করব? আমার দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছি। আমার সুইসাইড করা ছাড়া আর উপায় নেই। আমি অনেক দেনা করে ফেলেছি। এক শিফট করে কাজ করলে আমার দেনা মিটবে না। আমি অনেক কাকুতি মিনতি করেছি, কিন্তু কেউ আমার কথা শোনেনি। তাই আমি জেনারেল মেম্বারদের কাছে সবকিছু বললাম। এবার তোমরা বিচার করো যে আমি কী করব? আমি যদি কিছু করি, তার জন্য দায়ী এই কমিটির লোকরাই হবে।’