গত বছর আইপিএলে খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল হার্দিক পান্ডিয়াকে। গুজরাট টাইটানস ছেড়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এই তারকা অলরাউন্ডার। সেখানে তাঁকে অধিনায়ক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে বিষয়টি ভালোভাবে নেননি সমর্থকদের। তাঁরা যেন কিছুতেই রোহিত শর্মাকে সরিয়ে হার্দিককে অধিনায়ক করার বিষয়টা মানতেই পারছিলেন না। শুধু তাই নয়, তাঁর উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন গুজরাটের সমর্থকরা। ২০২২ সালে হার্দিকের হাত ধরে আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল গুজরাট। গুজরাট সমর্থকদের নয়নের মণি হয়ে উঠেছিলেন হার্দিক। তাই তাঁর আচমকা চলে যাওয়ার সিদ্ধান্তে হতাশ হয়েছিলেন তাঁরাও।
যেই মাঠে ম্যাচ খেলতে গেছেন হার্দিক, সেখানেই তাঁকে লক্ষ্য করে আওয়াজ দিয়েছেন দর্শকরা। সম্প্রতি এক পডকাস্ট শোয়ে উপস্থিত হয়ে হার্দিকের সেই কঠিন সময়ের কথা তুলে ধরেন ধারাভাষ্যকার যতীন সাপ্রু। রাজ শামানির সঙ্গে কথা বলার সময় যতীন সমর্থকদের সমালোচনা করে বলেন, ‘একজন সমর্থক হিসাবে তুমি হতাশ হতেই পারো। তুমি ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তে খুশি নাই হতে পার। কিন্তু একজন ভারতীয় ক্রিকেটার, যে দেশের জন্য এত অবদান রেখেছে, তাকে ব্যক্তিগত ভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। আমি সমর্থকদের এটা বলছি না যে তোমার আবেগ ভুল। কিন্তু সেটা একটা ট্রেন্ড তৈরি হয়ে গিয়েছিল।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘৫০ হাজার সমর্থক ক্রমাগত আওয়াজ দিয়ে গিয়েছে। শুধু ওয়াংখেড়ে নয়, ও যেই যেই মাঠে গিয়েছে, সেখানেই একই জিনিস হয়েছে। আমি ভারতীয় সমর্থকদের দিক থেকে বুঝতে পারছি যে তাদের রোহিতকে সরিয়ে দেওয়াটা ভালো লাগেনি। কিন্তু ওটা ফ্র্যাঞ্চাইজির সিদ্ধান্ত ছিল। তাকে সময় দিতে হত। একটা সময় রোহিত শর্মাও মরশুমের মাঝখানে অধিনায়ক হয়েছিল। আমরা রিকি পন্টিং, অনিল কুম্বলের মতো গ্রেটদেরও সরে যেতে দেখেছি। ফ্র্যাঞ্চাইজি সব সময় ভবিষ্যতের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু এক্ষেত্রে বিষয়টি ব্যক্তিগত হয়ে দাঁড়িয়েছিল।’
যতীন জানান যে সেই সময় কার্যত হার্দিককে অপরাধীর চোখে দেখা হয়েছিল। সবাই ভুলে গিয়েছিল যে সেও একজন মানুষ। তিনি বলেন, ‘ও যে একজন মানুষ সেটাই ভুলে গিয়েছিল সমর্থকরা। তার সঙ্গে অপরাধীর মতো ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু সে মানসিক শক্তি কী জিনিস সেটা দেখিয়েছিল। এমন একটা সময় এসেছিল হতাশ হয়ে ভেঙে পড়েছিল। আমি নিশ্চিত এই বিষয়ে। আমি বিশ্বকাপের সময় (টি-২০) যখন সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম তখন ও ভেঙে পড়েছিল। ও বলেছিল যে আমি আর সেই সময়ে ফিরে যেতে চাই না। ক্রিকেটে ভুল হতেই পারে, কিন্তু যেই ব্যবহারটা করা হয়েছে প্রায় অপরাধীর সমান।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘ভাবুন তো ওর পরিবার খেলা দেখতে এসেছে, ছেলে এসেছে, জিজ্ঞাসা করছে এত আওয়াজ কাকে দেওয়া হচ্ছে? তখন কেউ বলল, তোমার বাবাকে! বিষয়টা কেমন লাগবে? আমায় একজন ক্রিকেটার এমনও জানিয়েছিল যে তার খারাপ সময় বাড়ির সামনে দিক দিয়ে যাওয়া স্কুল বাস থেকে টিপ্পনি কাটা হয়েছিল, ফ্যামিলি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পরিবারের লোকরা তাকে নিয়ে মিম শেয়ার করছিল। এটা প্রকাশ্যে রয়েছে। যশ দয়াল নিজেই এক পডকাস্টে জানিয়েছিল। রিঙ্কু সিং যখন ওকে ৫ ছক্কা মেরেছিল সেই সময়ের।’