মোমিনপুরের অশান্তিকে ঘিরে ইতিমধ্যেই নানা চর্চা চলছে বাংলা জুড়ে। বিরোধী দল বিজেপি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি করেছে। তাঁদের দাবি, জেহাদিদের কাছে আত্মসমর্পণ করছে সরকার। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা ঠিক কী?
ঘটনার পরে দুদিন কেটে গিয়েছে। এখন কেমন আছে মোমিনপুর, একবালপুর? কী বলছেন মোমিনপুর ও সংলগ্ন এলাকার সাধারণ বাসিন্দারা? সেই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজেছে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা।
মঙ্গলবার কিছুটা চেনা ছন্দে ফিরছে মোমিনপুর ও সংলগ্ন এলাকা। এলাকায় সংখ্য়ালঘু মানুষদের সংখ্যাই বেশি। এলাকায় যাতে নতুন করে অশান্তি না ছড়ায় সেজন্য সতর্ক রয়েছে পুলিশ, প্রশাসন। ক্রমেই স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন। সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে স্কুলের পথে সংখ্যালঘু পরিবারের মহিলারা। তবে মোমিনপুর ও সংলগ্ন এলাকায় কিছু দোকানপাট বেলা পর্যন্ত বন্ধ ছিল এদিনও। অনেকেই বন্ধ দোকানের সামনে খবর কাগজে চোখ বোলাচ্ছেন। কিছু এলাকা এদিনও আংশিক থমথমে। প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাচ্ছেন অনেকেই। সিংহভাগ অটো মোমিনপুর পর্যন্ত যায়নি এদিনও। অনেকেরই একটাই কথা, অশান্তি করলে সব বন্ধ হয়ে যাবে। সংসার চলবে না। পেটে ক্ষিদে পেলে অশান্তি, ঝামেলা কিচ্ছু ভালো লাগে না। সম্প্রীতি বজায় থাকুক, চাইছেন সকলেই।
একবালপুর লেনে মাদ্রাসার জন্য অনুদান সংগ্রহ করছিলেন মমতাজ আলি। তিনি বললেন, আমরা সবাই একসঙ্গে থাকতে চাই। অশান্তি হলে কি পেট চলবে?
আসলে ঝামেলার রেশ অনেকটাই কাটিয়ে উঠছে মোমিনপুর। একবালপুুরে রাস্তার ধারের এক ফল বিক্রেতা বলেন, কী হবে ওসব করে? এতদিন একসঙ্গেই ছিলাম। পরের দিনগুলোতেও একসঙ্গেই থাকব। গরিব মানুষ আমরা। আমাদের খেটে খেতে হবে এটা জানি। এর বেশি কিছু জানি না। পেটে লাথি পড়লে সব শেষ।
ছাতুর সরবত বিক্রেতা থেকে মসজিদের পাশে দর্জির দোকানের কর্মী, মাংসের দোকানের কর্মী থেকে এলাকার বেকার যুবক সকলেরই একটাই কথা, অশান্তি আমরা কোনওভাবেই চাই না। এই শহর সম্প্রীতির শহর। অশান্তি করলে দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাবে। জীবিকাতে আঘাত আসুক, চাইছেন না কেউই। আসলে এই সম্প্রীতিই বরাবর দেখেছে শহর কলকাতা। সেই ঐতিহ্যে চিড় ধরুক এটা চাইছে না মোমিনপুর, একবালপুরও।