যাদবপুর হস্টেল। আক্ষরিক অর্থেই নাকি মুক্তাঞ্চল। সিসি ক্যামেরায় বেজায় আপত্তি যাদবপুরের পড়ুয়াদের একাংশের। সিনিয়রদের একাংশের দাদাগারিতে ওষ্ঠাগত জুনিয়ররা। সম্প্রতি প্রাণও গিয়েছে এক ছাত্রের। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে হস্টেলের চারদিকে একাধিক বাড়ি রয়েছে। তাদের অভিজ্ঞতা ঠিক কেমন?
কাছেই পোদ্দারনগর। তবে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গেও মাঝেমধ্যেই ঝামেলা হত আবাসিকদের। এদিকে পাশের ফ্ল্যাটের জানালা খুললেই দেখা যায় হস্টেল। আবার পাশের বাড়ির ছাদে উঠলেই দেখা যায় হস্টেলের ভেতরের একফালি সবুজ জমি। হস্টেলে ঠিক কী হত তা তাদের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়নি। এবার মুখ খুলতে শুরু করেছেন তাঁরা।
এবিপিতে সম্প্রচারিত খবর অনুসারে জানা গিয়েছে, হস্টেলের আবাসিকদের উপর সিনিয়ররা ঠিক কী ধরনের নির্যাতন করতেন তার সাক্ষী প্রতিবেশীরা, পাশাপাশি বাড়ির লোকজনরা। এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, সকালের দিকে বল দিয়ে কাঁচ ভেঙে দেয়। আর রাতের বেলা মদের বোতল ছোঁড়ে।
অপর এক মহিলা সংবাদমাধ্য়মে জানিয়েছেন, ছাদে উঠতে পারতাম না। আয়না দিয়ে মুখে আলো ফেলত। কোনওরকমে এসে লুকিয়ে পড়তাম। ওরা জানতে পারলেই অশ্লীল কথা বলত। নীচে নেমে যেতে বাধ্য হতাম। কাপড় জামা শুকোতে দিতেও আসতে পারি না। পুলিশকে বলেও লাভ হয় না।
অন্যদিকে অপর এক মহিলার দাবি, পরপর ওই যে জানালা। টিভি চলত দেখতাম। জামাকাপড় খুলে ২ হাত বেঁধে প্রচন্ড অত্যাচার করে। সারারাত ধরে এসব চলে।
এদিকে ২০০৯ সালে পোদ্দারনগরের বাসিন্দাদের সঙ্গে একেবারে মুখোমুখি হয়ে গিয়েছিল যাদবপুরের হস্টেলের পড়ুয়ারা। সেবার রাস্তায় রীতিমতো অশান্তি শুরু হয়ে যায়। কিন্তু তারপরেও পরিস্থিতি বদলায়নি। আর যাবদপুরের হস্টেলের ছেলেদের এই অশ্লীল ব্যবহার ক্রমেই গা সওয়া হয়ে যাচ্ছিল প্রতিবেশীদের। তাছাড়া তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না এটাই যেন অলিখিত নিয়ম হয়ে গিয়েছিল। পুলিশও কার্যত হাল ছেড়ে দিয়েছিল।
তবে ছাত্র মৃত্যুর পর থেকে কার্যত ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছেন প্রতিবেশীরা। এতদিন যে যন্ত্রণা সহ্য করেছেন তা থেকে মুক্তি চাইছেন তাঁরাও। ক্যামেরার সামনে মুখ খুলছেন স্থানীয়রা। আর যে কথা তাঁরা বলছেন তাতে যাদবপুরের হস্টেলের আবাসিকদের দাঁড় করাল বড় প্রশ্নের সামনে। তবে এনিয়ে আবাসিকদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।