বিশ্বভারতীর এক গবেষকের মৃত্যুকে ঘিরে তৈরি হয়েছে রহস্য। ওই গবেষকের নাম আদ্রিশ দে (২৯)। বুধবার সন্ধ্যায় রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় একটি গাড়ির ধাক্কায় তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনাটি পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের। তাঁর মৃত্যুতে উঠে আসছে নানা তত্ত্ব। পরিবারের অভিযোগ, এটা কোনও দুর্ঘটনা ছিল না। তাঁকে মেরে ফেলা হয়েছে। সহকর্মীদের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন পরিবারের সদস্যরা। যদিও ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।
আরও পড়ুন: স্থায়ী উপাচার্য পেল বিশ্বভারতী, কৃষিবিজ্ঞানী প্রবীর ঘোষের পড়াশোনা শান্তিনিকেতনেই, জানুন পরিচয়
জানা গিয়েছে, বিশ্বভারতীর রুরাল এক্সটেনশন সেন্টারের ‘লাইফ লং লার্নিং এন্ড এক্সটেনশন’ বিভাগে গবেষণারত ছিলেন আদ্রিশ। একইসঙ্গে গত দেড় বছর ধরে তিনি একটি এনজিওর রঘুনাথপুর শাখায় সোশ্যাল প্রটেকশন ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন। তাঁর বাড়ি বীরভূমের বোলপুরের রায়পুর-সুপুর পঞ্চায়েতের জোড়া শিবমন্দির এলাকায়। তবে ওই এনজিওরে রঘুনাথপুরে একটি ভাড়া নেওয়া বাড়িতে সংস্থার আরও কয়েকজনের সঙ্গে থাকতেন অদ্রিশ।
জানা গিয়েছে, প্রতিদিনের মতো বুধবার সন্ধ্যায় আদ্রিশ ওই সংস্থার ফার্মাসিস্ট দীপক চাঁদের সঙ্গে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। সেই সময় একটি চার চাকার গাড়ি পিছন থেকে এসে আদ্রিশকে ধাক্কা মারে। ঘটনায় তিনি গুরুতর জখম হন। মারাত্মক রক্তক্ষরণ হলে তাঁকে প্রথমে রঘুনাথপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তাঁর অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক থাকায় পরে তাঁকে স্থানান্তর করা হয় দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার ভোররাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। ইতিমধ্যেই এনজিওর তরফে এই ঘটনায় রঘুনাথপুর থানায় একটি অভিযোগ জানানো হয়েছে। এদিকে, দীপক জানিয়েছেন পিছন থেকে গাড়ি এসে ধাক্কা মারলে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। জ্ঞান ফিরলে তিনি আদ্রিশকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।
জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনায় অদ্রিশের পাঁজরের ও শরীরের একাধিক অংশের হাড় ভেঙে যায় এবং ফুসফুস সহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। তবে দীপক কোনও আঘাত পাননি। তাতেই সন্দেহ দানা বেঁধেছে। আদ্রিশের পরিবারের দাবি, সংস্থার এক সহকর্মী এবং ট্রাস্টের এক গাড়ি চালকের সঙ্গে সম্প্রতি আদ্রিশের ঝামেলা হয়েছিল। তাঁর এই মৃত্যুর পিছনে রহস্য রয়েছে বলে তাদের ধারণা। পুরুলিয়ার পুলিস সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।