জমি-বিবাদ ও প্রেমঘটিত কারণে মালদায় তৃণমূল নেতাকে খুন করা হয়েছে। তদন্তে এমনই জানতে পেরেছে পুলিশ। ইংরেজবাজারের লক্ষ্মীপুর এলাকায় তৃণমূল নেতা আবুল কালাম আজাদকে খুনের ঘটনায় মোট ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন, তৃণমূলের কাজীগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য মাইনুল শেখ, তাঁর ভাই সইদুল শেখ এবং ঘনিষ্ঠ দুই সহযোগী ইমারত শেখ ও শহিদ শেখ।
আরও পড়ুন: মালদায় জন্মদিনের পার্টিতে নৃশংসভাবে খুন তৃণমূল নেতা, কাঠগড়ায় দলেরই অন্য নেতা
ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার রাতে। সদ্য বিবাহিত তৃণমূল নেতা ও জমি ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে এক আত্মীয়ের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন অভিযুক্ত মাইনুল শেখও। এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে কথাকাটাকাটি শুরু হয়, যা রূপ নেয় মারামারিতে। আচমকা আবুলের ওপর হামলা চালানো হয়। লাঠি ও ধারাল অস্ত্রের আঘাতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। তাঁর স্ত্রী শিউলি ওরফে পাখি আটকাতে গেলে তাকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দু’জনকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি আবুলের।
পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, শিউলি আসলে আবুলের দ্বিতীয় স্ত্রী। আর এই শিউলির সঙ্গে অভিযুক্ত মাইনুল শেখের ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে দাবি তদন্তকারীদের। এই প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে গিয়ে হঠাৎ আবুলের সঙ্গে শিউলির বিয়ে মেনে নিতে পারেননি মাইনুল। তার উপর জমি সংক্রান্ত একটি পুরনো বিবাদও ছিল দুই পরিবারের মধ্যে। সেই ক্ষোভ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়েই চরমে পৌঁছয় বলে অনুমান পুলিশের। তবে এই খুনের পেছনে রাজনৈতিক কোনও কারণ নেই বলে এখনই মনে করছে প্রশাসন।
শনিবার সকালে অভিযুক্ত চারজনকে গ্রেফতার করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। এরপর তাদের মালদা আদালতে পেশ করে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানানো হয়। তদন্তে আরও কী তথ্য সামনে আসে, সেদিকেই তাকিয়ে প্রশাসন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত আবুল কালাম আজাদ এলাকায় তৃণমূলের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। সম্প্রতি জমি ব্যবসার সূত্রে তাঁর প্রভাব বাড়ছিল। অপরদিকে, পঞ্চায়েত সদস্য মাইনুল শেখও দীর্ঘদিন ধরে দলীয় প্রভাব বজায় রেখেছেন এলাকায়। দুই পক্ষের মধ্যে এই সংঘর্ষে শেষমেশ মৃত্যু হল আবুলের। ঘটনায় এলাকায় শোক এবং চাঞ্চল্য দু’টিই ছড়িয়েছে সমানভাবে। উল্লেখ্য, তৃণমূল প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে এই ঘটনা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নয়।