লোকসভা নির্বাচনে নিজের কেন্দ্রে হেরে গিয়েছিলেন অধীর চৌধুরী। মুর্শিদাবাদে বড় ধাক্কা তখন খেয়েছিল কংগ্রেস। বহরমপুর কেন্দ্র হাতছাড়া হতেই কংগ্রেসের নেতা–কর্মী ঘাসফুলের তলায় আশ্রয় নিতে চলে এসেছিলেন। এরপর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদও ছেড়ে দিতে হয় অধীর চৌধুরীকে। তারপর থেকে বাংলায় আরও সঙ্গীন দশা হয় কংগ্রেসের। এবার বছর ঘুরলেই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন হবে। আর তার প্রাক্কালে মুর্শিদাবাদ জেলায় আবার বড় ধাক্কা খেল কংগ্রেস। কারণ কংগ্রেস ছেড়ে এখন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন বড়ঞার প্রাক্তন বিধায়ক প্রতিমা রজক। মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দিতে এই দলবদল সারেন প্রতিমা।
এদিকে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর বেশ চাপে পড়ে গিয়েছে কংগ্রেস। কারণ একদা গড় ইতিমধ্যেই ভেঙে গিয়েছে। আর সেটা আদৌ থাকবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের বহরমপুর–মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অপূর্ব সরকার এদিন প্রতিমা রজকের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন। তবে এই যোগদান অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন বড়ঞার এখনকার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। অথচ বড়ঞা বিধানসভা কেন্দ্রের একাধিক তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মঞ্চে ছিলেন। জেলা মহিলা কংগ্রেসের দাপুটে নেত্রী হিসাবেই পরিচিত প্রতিমা রজক। ২০২৬ সালে বিধানসভার টিকিট পেতে পারেন বলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। ২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দু’বার কংগ্রেসের টিকিটে জিতে বিধায়ক হন প্রতিমা দেবী। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিট না পেয়ে তিনি বসে যান।
আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, এখন কী করবেন?
অন্যদিকে বড়ঞার এখনকার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেল খেটে এসেছেন। এখন জামিনে আছেন। তাই তাঁকে আবার টিকিট দিয়ে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চায় না শীর্ষ নেতৃত্ব। তার মধ্যে কদিন আগে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক বৈঠকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, বড়ঞার বিধানসভা কেন্দ্রের যাবতীয় দায়িত্ব বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল সামলাবেন। অনুব্রত দায়িত্ব নেওয়ার পরই ভাঙন ধরল কংগ্রেসে। যা কপালে ভাঁজ ফেলার পক্ষে যথেষ্ট।
কংগ্রেসের এই প্রাক্তন বিধায়ক তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে অত্যন্ত খুশি। প্রতিমা রজক এই যোগদান নিয়ে বলেন, ‘একুশের বিধানসভা নির্বাচনে আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিনি। আর শারীরিক অসুস্থতায় সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলাম না। এখন আমি সুস্থ। তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে দলে যোগ দেওয়ার আবেদন করেছিলাম। সেই আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। আমরা সকলে মিলে একসঙ্গে আবার কাজ করব। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস আরও ভাল ফলাফল করবে।’ আর তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অপূর্ব সরকারের বক্তব্য, ‘প্রতিমা রজক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করার জন্য আবেদন করেন। সেই আবেদন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব মেনে নিয়েছে। আমরা একসঙ্গে কাজ করব।’