যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ না করেই ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাও আবার অবসরের কদিন আগেই। এই নিয়ে রাজ্য–রাজনীতিতে বেশ হইচই শুরু হয়েছে। এবার তার মধ্যেই সাসপেন্ড করা হল বর্ধমান রাজ কলেজের প্রিন্সিপালকে। কর্তব্যে গাফিলতি–সহ একাধিক অভিযোগ উঠেছে বর্ধমান রাজ কলেজের প্রিন্সিপাল নিরঞ্জন মণ্ডলের বিরুদ্ধে। প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে গতকাল পরিচালন সমিতিতে আলোচনা হয়। সেখানের বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সাসপেন্ডের। এই বিষয়টি জানান বর্ধমান রাজ কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি স্বপনকুমার পান। কর্তব্যে গাফিলতি থেকে শুরু করে তহবিলের অব্যবস্থার অভিযোগ রয়েছে। আর তাই রাজ কলেজের প্রিন্সিপাল নিরঞ্জন মণ্ডলকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
এই অভিযোগ আগেই জমা পড়েছিল। কিন্তু তখন কিছু জানানো হয়নি। কারণ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছিল। আর তদন্তে অভিযোগ সঠিক প্রমাণিত হওয়ায় সাসপেন্ড করা হয়েছে বর্ধমানের রাজ কলেজের প্রিন্সিপাল নিরঞ্জন মণ্ডলকে। কলেজ সূত্রে খবর, তিন মাস আগেই নিরঞ্জন মণ্ডলকে শোকজ করেছিল কলেজ পরিচালন সমিতি। তাঁর কাছ থেকে জবাব আসতেই ২৮ মার্চ কলেজের পরিচালন সমিতির বৈঠক বসে। প্রিন্সিপালের দেওয়া জবাব নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়। এই বিষয়ে কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি স্বপনকুমার পান বলেন, ‘প্রিন্সিপালের উত্তর সঠিক নয় বলে বিবেচিত হওয়ায় পরিচালন সমিতির সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে প্রিন্সিপালকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছেই পিয়ানোয় তুললেন সুরের ঝঙ্কার, ঘুরে দেখলেন সবই
এই ঘটনা নিয়ে এখন কলেজের অন্দরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। ছাত্রছাত্রীরাও গোটা বিষয়টি জেনে গিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, এটা তো হওয়ারই ছিল। কিন্তু নিরঞ্জন মণ্ডল পরিচালন সমিতির অভিযোগের সঙ্গে একমত নন। তাই নিরঞ্জন মণ্ডল তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। নিরঞ্জন মণ্ডল সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘কলেজে কর্মীর অপ্রতুলতা, অ্যাকাউন্টসের কাজ করার মতো নির্দিষ্ট কর্মী না থাকা এবং অসহযোগিতার জন্যই সংশ্লিষ্ট সমস্যা তৈরি হয়েছে। এই পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আমি আদালতের দ্বারস্থ হবো। আমি কোনও আর্থিক অনিয়ম করিনি।’
এই দু’রকম বক্তব্য সামনে আসায় ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। নিরঞ্জন মণ্ডলের কথায়, ‘আমার কলেজে মাত্র ৯ জন স্টাফ। অস্থায়ী যাঁরা তাঁরা কাজ জানেনও না এবং কাজ করেনও না। তাই সকল শিক্ষকের সাহায্য নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। স্টাফ না থাকায় কাজের চাপ বাড়ছে। তাই কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ হয় কেমন করে! কোনও কাজ তো বাকি নেই। তহবিল তো প্রিন্সিপাল সরাসরি দেখেন না। ক্যাশিয়ার, হিসাবরক্ষক, হেড ক্লার্ক দেখে থাকেন। তাঁরা নেই। কোনও মতে কলেজ চালাচ্ছি।’ এখন নিরঞ্জন মণ্ডলের জায়গায় সবটা সামলাবেন কলেজেরই রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিজয় চাঁদ।